ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

জেলার ৪৪ কোরবানির হাট নিরাপত্তার চাদরে

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::   মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা সমাগত। আগামি ২২ অথবা ২৩ সেপ্টেম্বর যে কোনদিন এ কোরবানির ঈদ। ঈদের প্রধান কাজ সামর্থ অনুযায়ি পশু কোরবানি। জেলায় এবারের ঈদে ছোট-বড় ৪৪টি কোরবানির হাট বসছে। বাজারে ক্রেতা বিক্রেতা ও সর্বসাধারণের নিরাপত্তা বিবেচনায় এবার ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও নেওয়া হয়েছে নানা প্রমোশনমূলক কর্মসূচি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাজারে কোরবানের পশু পরীক্ষার জন্য প্রশাসনের থেকে মেডিকেল টিম। জাল নোট সনাক্তকরণে বাজারে থাকছে ৪৪টি বিশেষ জালনোট সনাক্তকরণ মেশিন। ছিনতাইকারিদের দৌরাত্ব্য বন্ধে এবং ক্রেতা- বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। কোরবানের বাজারে নিরাপত্তা বিষয়ে ককসবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন “ কোরবানের পশুর হাটে প্রতিটি বাজারে ৩ স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সর্বসাধারণ যাতে নির্বিঘেœ বিকিবিকি করতে পারে সে ব্যাপারে সর্তক রয়েছে পুলিশ। প্রতিটি বাজারে ১টি করে পুলিশের মোবাইল টিম কাজ করবে পাশাপাশি সাদা পোশাকে ও বিশেষ পুলিশ সদ্যরা আলাদাভাবে মোতায়েম থাকবে।
এদিকে আজ রবিবার কোরবানির বাজারের প্রথম দিনেই খরুলিয়া বাজারে সহ¯্রাধিক গরু বিক্রির আশা করছেন ইজারাদার মোঃ তারেক। আজ নিয়মিত হাটবারের পাশাপাশি কোরবানের পশুর হাট। ফলে ক্রেতারা ঝামেলা ছাড়াই শুরুতে গরু ক্রয় করতে পারবেন। ইজারাদার জানান “আজ খরুলিয়া বাজারে ১০ হাজারের মত গরু মহিষ বাজারে তোলার সম্ভাবনা। গতবছর গরুর সারি প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কজুড়ে ছিল। এ বছর প্রচুর গরু বাজারে সরবরাহ থাকলে ও মাঝারি মানের গরুর দাম বেশি হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে আগামী সপ্তাহে গরু বিক্রি বাড়তে পারে সদরের ঈদগাঁও বাজার, পিএমখালীর জুমছড়ি বাজার, রামুর কলঘর বাজার , মিঠাছড়ির কাটির রাস্তা বাজার , উখিয়ার রুমখাঁ বাজারসহ প্রায় সবকটি বাজারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বাজারে মায়ানমারের, ভারতের এবং দেশিয় প্রচুর গরু মজুদ করেছে বিক্রেতারা।
হাট সমুহে ক্রেতা সাধারণের নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশি টহল জোরদারের পাশাপাশি নতুন করে সাজানো হয়েছে হাটসমুহকে। সকাল থেকে রাত অবধি যেন নির্বিঘেœ বিকিকিনি করা যায় এজন্য সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি বাজারের ইজারাদার ।
এদিকে সদর উপজেলার তথা জেলার সর্ব বৃহৎ পশুর হাট খরুলিয়া বাজারসহ ৪টি হাটই সড়কের উপর হওয়ায় দূর্ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।। খুরুস্কুল রাস্তার মাথার পৌরসভার একমাত্র কোরবানের পশুর হাটে আগামি ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার শাহেদ মোঃ এমরান। এ বাজারে বিক্রি বাড়াতে গতবছর নেয়া হয়েছিল সেলফি অফার। বাজার থেকে সেলফি তুলে যিনি সেরা হবেন তার জন্য ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ পুরস্কার ঘোষনা করেছিলেন ইজারাদার।
এদিকে গেল বাংলা বর্ষে খরুলিয়া ও ঈদগাঁও বাজার সারা বছরের জন্য ইজারা সম্পন্ন করেছিল সংশিষ্ট প্রশাসন। ইজারা হওয়া ২টি বাজার নিলাম হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। এদের মধ্যে খরুলিয়া বাজারের ইজারা হয়েছে রেকর্ড ২কোটি ৪ লাখ টাকা এবং ঈদগাঁও বাজারের ইজারা হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। এছাড়া রামুর কলঘর বাজার ইজারা হয়েছে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এটি ইজারা নিয়েছে শিমুল এন্টারপ্রাইজ। পি এম খালীর নুর মোঃ চৌধুরীর বাজার, জুমছড়ি বাজার চলতি সপ্তাহে ইজারা হবে বলে জানা গেছে। কোরবানির পশুরহাট ইজারার মাধ্যমে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলে ও বাজার সমূহের উন্œয়নে তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় হতাশ ইজারা গ্রহিতারা। ইজারাদার ও স্থানিয় ব্যবসায়িদের অভিযোগ – জেলার বৃহৎ কোরবানির পশুর হাট খরুলিয়া বাজার প্রতি বছর সর্বোচ্চ টাকায় ইজারা হলেও বাজারটির উন্নয়নে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। মহাসড়কের উপর প্রতি বছর বাজার বসে। ফলে ঈদুল আযহার সময় গরু কিনতে আসা অনেক লোক সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। বাজার বসার জন্য পর্যপ্ত জায়গা না থাকায় ইজারাদাররা নিরুপায় হয়ে সড়কের উপর পশুর হাট বসাতে বাধ্য হন বলে জানান। গত বছর ও খরুলিয়ার পশুর হাটটি রের্কড ১ কোটি ২ লাখ টাকায় ইজারা হয়। প্রতি বছর বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হলেও খরুলিয়া বাজারটি নানা কারনে অবহেলিত। নির্মান করা হয়নি বিভিন্ন শেডের। প্রতি রবি ও বুধ বার সপ্তাহে ২ দিন নিযমিত পশুর হাট বসলেও ক্রেতা-বিক্রেতা চরম ঝুকি নিয়ে সড়কের উপর বিকিকিনি সারছে। সড়কের উপর বাজার বসার কারনে সড়কের উভয় পাশে মাটি সরে গিয়ে মহাসড়কের মারাত্বক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। অপরদিকে সদরের অপর বৃহৎ কোরবানির পশুর হাট ঈদগাও বাজার ও গত ঈদুল আযহায় ইজারা হয়েছে ৫৪ লাখ টাকায়। এ হাটটি ও মহাসড়কের উপর বসার কারনে সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি তীব্র যানজট লেগেই থাকে। খরুলিয়া ও ঈদগাও বাজারের ইজারাদাররা সড়ক দুর্ঘটনার কবল থেকে ক্রেতা, বিক্রেতা ও সাধারণ পথচারিদের রক্ষায় মহাসড়কের উপর থেকে সুবিধাজনক স্থানে কোরবানির পশুর হাট স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট।
প্রশাসনের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কারনে এ বছর চাঁদাবাজি, জালনোট চক্রের দৌরাত্ব্য, দালাল ও ফড়িয়াদের উঠকো ঝামেলা ছাড়াই পছন্দের গরু – মহিষ বিকিকিনি করতে পারবেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: